‘আদরিণী’ হল দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ক বিষয়ের একটি গল্প। গল্পটির লেখক হলেন প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়।
আদরিণী গল্পের উৎস, প্রকাশকাল, সারাংশ ও নামকরণের সার্থকতা – দ্বাদশ শ্রেণি – বাংলা
আদরিণী (Adarini)
প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়
লেখক পরিচিতি
উৎস ও প্রকাশকাল
১৩২০ বঙ্গাব্দের ভাদ্র সংখ্যায় ‘সাহিত্য’ পত্রিকায় ‘আদরিণী গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়।
সারাংশ (বিষয়বস্তু)
অবলা জীব ও মানুষের সম্পর্কের অদ্ভুত রসায়নের গল্প। শরৎচন্দ্রের ‘মহেশ’ গল্পে বলদ মহেশ ও গফুর মিঞার পিতা-পুত্রের সম্পর্কের মেলবন্ধন। আর প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘আদরিণী’ গল্পে মাদি হাতি আদরিণী ও মোক্তার রামজয় মুখোপাধ্যায়-এর কন্যা ও পিতার এক নীরব ভালোবাসার গল্প।
জয়রাম মুখোপাধ্যায় সেকালের ইংরেজি না জানা কিঞ্চিত বদমেজাজী কিন্তু হৃদয়বান, সামান্য তোষামোদে গলে পড়া একজন মোক্তার। ঘটনাচক্রে কিঞ্চিৎ জেদের বশে একটি মাদি হাতি কিনে বসেন। জ্যেষ্ঠা পুত্রবধূ সভয়ে তার পা ধুয়ে তেল ও সিঁদুর দিলেন মাথায়। হলো শঙ্খ ধ্বনি। ধামায় করে আতপ চাল কলা খাইয়ে বরণ করা হলো ঘরের নতুন সদস্য আদরিণীকে।
দেদার উপার্জন করা রামজয় মুখোপাধ্যায় খরচ করেন দুহাতে। কালক্রমে নব্য ইংরেজি জানা উকিলদের সংখ্যাধিক্যে জয় রামের স্বচ্ছলতা চলে যায়। কিন্তু ব্যয় বাড়তে থাকে। অপদার্থ তিন পুত্র উপার্জনে অক্ষম। হাতির ব্যয় সংকোচনের জন্য ভাড়ায় দেওয়া হল কিন্তু তাতেও কোনো সুরাহা হয় না।
জয় রামবাবু সর্বস্বান্ত হলেন। সাংসারিক চাপে আদরিণীকে হাটে বিক্রি করার চেষ্টা হলেও সে অবিক্রিত থেকে যায়। পরের হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে গেলে জয়রামবাবু তার সাথে শেষ দেখা করতে পারেন না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আদরিণীকে নিয়ে গেলে তার দুচোখে বেয়ে নামে অশ্রু ধারা। স্বজন বিচ্ছেদের ব্যথায় কাতর পথিমধ্যেই অসুস্থ হয়ে মারা যায় আদরিণী। শেষবারের মতো জয়রাম চোখের দেখা দেখতে পান না। সবাইকে ফাঁকি দিয়ে একরাশ দুঃখ নিয়ে নিরবে চলে যায় সে।